Ticker

6/recent/ticker-posts

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওর যাওয়ার উপায়

astagram-haor
অষ্টগ্রাম হাওর (ছবি সংগৃহীত)   

কিশোরগঞ্জে হাওর, নদী আর মিঠাপানির জলাভূমির এক বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতি দেখা যায়। বর্ষায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত একটি জেলা। চারিদিকে থৈ থৈ পানির রাজ্য আর সবুজ শ্যামলিমা। বর্ষার অপরুপ সৌন্দর্য আর প্রকৃতির সুবিমল বৈচিত্র্য খুব কাছ থেকে দেখতে পাওয়া যায় কিশোরগঞ্জে। 

অষ্টমঙ্গল হাওর কিশোরগঞ্জের একটি অন্যতম জায়গা। চারিদিকে হাওর বেষ্টিত হওয়ায় অষ্টমঙ্গল উপজেলা টি কিশোরগঞ্জ জেলা হতে প্রায় বিচ্ছিন্ন। এটি কিশোরগঞ্জ সদর হতে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এর উত্তরে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন ও ইটনা এবং দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর উপজেলা। বার্ষার থৈ থৈ পানির মধ্যে এই গ্রাম গুলোকে মনে হয় যেন ছোট ছোট দ্বীপ।  বার্ষাকালে এর অপরূপ সৌন্দর্য্য ফুটে ওঠে। কিশোরগঞ্জ সদর হতে প্রায় তিনঘন্টার পথ পেড়িয়ে যেতে হয় অষ্টগ্রামে। 
বর্ষায় এখানের জীবন বৈচিত্র্য আরও সচল হয়ে উঠে। জেলেরা ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে হাওয়ার এর বুকে ভেসে বেড়ায়। মাছ ধরে তাদের জীবনমান সচল রাখে। বর্ষায় নৌকা ভাসালে মনে হয় যেন কুল নাই কিনার নেই অটল দড়িয়ার পানি।
ইচ্ছে হলে হাওর এর বুকে মাঝিদের নৌকায় রাত কাটাতে পারেন। হাওর থেকে মাছ ধরে রান্না করে খাওয়া, জোছনা রাতে নৌকায় বসে এক অপরুপ সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারবেন।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

কুতুবশাহ মসজিদ
কুতুবশাহ মসজিদ ( ছবি সংগৃহীত)  

এখানেই আছে ৪০০ বছরের পুরানো কুতুব শাহ মসজিদ, ঐতিহ্য আর পুরাকীর্তির এক অনন্য নিদর্শন। সুলতান ও মোঘল সম্রাজ্যের স্থাপত্য শৈলীর সুন্দর নিদর্শন রয়েছে এই মসজিদে।  দরবেশ কুতুব শাহ এর নাম অনুসারে এই পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ টির নামকরণ করা হয়। অষ্টগ্রাম উপজেলায় নেমে বাজারের বাবুলের রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে সোজা চলে যাবেন কুতুব শাহ মসজিদে। মসজিদের পাশেই আছে কুতুব শাহ মাজার।  গেলেই দেখতে পাবেন এর অপরুপ সৌন্দর্য ।
এছাড়াও  বর্ষাকালে কিশোরগঞ্জের নিকোলীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়। নৌকোবাইচ এর এই উৎসবে উপজেলা সদর সহ হাওরবাসী দের মনে আনন্দের আমেজ ফুটে উঠে। মাঝিদের দাড় বেয়ে নৌকা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে হাজার হাজার লোকের ভীড় জমে। ছোট বড় সকলে খুব আনন্দের সাথে নৌকাবাইচ উপভোগ করে। বেড়িবাঁধ সংলগ্ন সোয়াইজনী নদীর তীরে মানুষের ভীড় দেখার মতো।

নৌকা বাইচ
নৌকা বাইচ ( ছবি সংগৃহীত)   


কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাস উভয় মাধমেই আপনি কিশোরগঞ্জ আসতে পারেন। তবে ট্রেনে আসলেই ভালো হয়, সকাল ৭ টায় এগারসিন্ধু প্রভাতী  কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।  এছাড়াও বাসে করে গুলিস্তানের ফুলবাড়ি থেকে কিশোরগঞ্জ যাওয়া যায়। বাস বা ট্রেনে করে আসতে হবে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর এখানে সরাসরি বাস থামে এবং ট্রেনের স্টেশন রয়েছে। এরপর রিক্সা করে লঞ্চঘাটে আসবেন যেখান হতে অষ্টগ্রাম হাওর এর উদ্দেশ্যে লঞ্চ রওনা হয়।
চট্টগ্রাম থেকে অষ্টগ্রাম হাওর যেতে হলে অলংকার বা একেখান থেকে সৌদিয়া বা বিভিন্ন বাস রওনা হয় কিংবা ট্রেনে করেও যেতে পারেন এতে সঠিক সময় জেনে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। 


যাতায়াত খরচ
ঢাকা থেকে ট্রেনে করে কুলিয়ারচর - ১১০ টাকা
ঢাকা গোপালবাগ থেকে বাস করে কুলিয়ারচর - ১৮০ টাকা
যদি ভৈরব রেলস্টেশনে নামেন তবে লোকাল সিএনজি করে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দিয়ে কুলিযার চড় চলে আসুন
কুলিয়ারচর হতে লঞ্চঘাট - ২০ থেকে ৩০ টাকা
লঞ্চে করে অষ্টগ্রাম - জনপ্রতি ৯০ টাকা
চট্টগ্রাম থেকে কিশোরগঞ্জ বাসে করে- ৮০০ টাকা
লঞ্চ ছাড়ার সময়সূচি 

প্রতিদিন সকাল ৬ টা, ৮টা, ৯টা ও ১১ টা এবং ৩ টা পর্যন্ত ও লঞ্চ অষ্টগ্রাম রওনা হয় এজন্য তিন ঘনাতা সময় লাগে।
থাকার ব্যাবস্থা

এখানে থাকার জন্য হোটেল বা কোনো সুব্যবস্থা নেই। একমাত্র জায়গা হলো জেলা পরিষদ ডাক বাংলো। এখানে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা রুম ভাড়া হয়ে থাকে।

  সতর্কতাঃ যানবাহনের ভাড়া, হোটেল রিসোর্ট ও অনান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই অনুগ্রহ করে কোথাও যাওয়ার পূর্বে বর্তমান খরচের তথ্য জেনে রাখবেন।

ভ্রমণ হোক আনন্দদায়ক 😊 ধন্যবাদ

(চাঁঁদের পাহাড় ট্যুরিজম ) 


   


Post a Comment

0 Comments